আমাদের কৃষ্ণমূর্তি ফাউন্ডেশন ইণ্ডিয়া, কলকাতা কেন্দ্রে আয়োজিত ছকভাঙা সমাবেশে (১০ জুলাই ২০২২ রবিবার) উপস্থিত হওয়া সমস্ত বন্ধুদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ওইদিন আমরা একটা আকর্ষণীয় অডিও (সানেন ১৯৭১) প্রোগ্রাম শুনেছি। আমরা দেখেছি হৃদয়, মন এবং শরীরের সামঞ্জস্য নিয়ে শ্রোতাদের প্রশ্নে কৃষ্ণমূর্তি কীভাবে সাড়া দিচ্ছেন। এই বিষয় সম্পর্কে দুটি লিঙ্ক নীচে দিলাম।
Link for video: https://jkrishnamurti.org/content/harmony-mind-heart-and-body-0
Link for transcript: https://jkrishnamurti.org/content/harmony-mind-heart-and-body
আমাদের মনে হয়েছে কৃষ্ণমূর্তি বলতে চাইছেন যে, এক্ষেত্রে সেরকম একটা অবস্থা থেকে শুরু করতে হবে যে অবস্থায় যেটা-যেমন-যেভাবে আছে তাকে সেভাবেই দেখার সামর্থ্য থাকবে। ‘অর্থাৎ মানুষ একটা বিকৃত জীবনযাপন করছে। এর মধ্যে কোন সামঞ্জস্য নেই। এটা একটা বৈপরীত্য এবং ভণ্ডামির সমাহার – ভাবছে একরকম, করছে অন্য কিছু, বলছে অন্য আরেকরকম। এ সবই হ’ল বৈপরীত্যময়, সামঞ্জস্যহীন একটা জীবনের লক্ষণ। এটাই বাস্তব। এখন দেখতে হবে কীভাবে এই বাস্তবতাকে পাল্টানো যায়। কীভাবে আমি আমার মনের মধ্যে তৈরী করা আদর্শ হয়ে উঠব সেটা আমাকে টানে না। তফাতটা বুঝতে পারছ? আমার ভাবনা হ’ল ‘যা বিদ্যমান’ তাকে পাল্টানো – মন, হৃদয়ের পরিবর্তন ঘটানো। ধূমপান, মদ্যপান প্রভৃতি যেসব অভ্যাস শরীর ও মন তৈরী করে ফেলে সেগুলি কি পাল্টানো সম্ভব?
এরপরই কৃষ্ণমূর্তি লক্ষ করা, পর্যবেক্ষণ করার মতো কেন্দ্রীয় বিষয়গুলি নিয়ে অনেকটা সময় দিয়েছেন। ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবন কী সেই প্রশ্ন দিয়ে আমরা শুরু করেছিলাম। আমরা আমাদের অসংগতিপূর্ণ জীবনযাপনের কথা বলেছি। আমাদের জীবনে কোন সামঞ্জস্য নেই। সেটাই বাস্তব। আমি সেরকম একটা অবস্থায় আছি, সেরকম জীবনযাপন করছি যা সুসমঞ্জস নয়। কেন নয় সেটা আমি লক্ষ করছি। দেখছি যে এর মধ্যে বৈপরীত্য ইত্যাদি আছে। এরপরই আমার প্রশ্ন, কে এইসব লক্ষ করছে? যদি চিন্তা এগুলি লক্ষ করে তবে তো এখনও সেই অতীতই সেগুলি লক্ষ করে চলেছে। এরকম কোন পর্যবেক্ষণ কি আছে যা চিন্তার অংশ নয়?’
তাই এটা স্পষ্ট যে অন্বেষণ করার মতো অনেক কিছুই আছে। কৃষ্ণজি এই কথা বলে শেষ করছেন,
“যখন তুমি প্রকৃতি ও চিন্তার কাঠামোকে লক্ষ করো, যখন লক্ষ করো কোথায় এর গুরুত্ব আছে, কোথায় নেই, এর সত্যতাকে লক্ষ করো – বুঝতে পারছ? – এর ক্রিয়াশীলতা এবং এর নিষ্ক্রিয়তার সত্য, তখনই সেটা একটা ভিন্ন ধরনের পর্যবেক্ষণ হয়ে যায়। সেই পর্যবেক্ষণের মধ্যে সময় চলাচল করে না। সেটা সময়ের ভিত্তিতে অবস্থান করে না। তুমি যদি তোমার মন, তোমার সচেতনতা প্রয়োগ করো তাহলে তুমি নিজেই এটা দেখতে পাবে।”
হয়ত গভীরে চিন্তাভাবনা করে দেখলে আমরা ‘চিন্তাবিহীন পর্যবেক্ষণ’-এর তাৎপর্য সম্যকভাবে বুঝতে পারব। মনে হয় তার মধ্যেই সত্য উদ্ঘাটনের চাবিকাঠি আছে। মনে হয় দর্শন, পর্যবেক্ষণ, বুদ্ধিমত্তা, প্রত্যক্ষ করণ, সচেতনতার মধ্যেই সুসমঞ্জস জীবনযাপনের চাবিকাঠি আছে। ‘আমি’ ব্যতিরেকে পর্যবেক্ষণ।
সেরকম কোন পর্যবেক্ষণ কি আছে যার মধ্য দিয়ে ‘যা বিদ্যমান’ তার (‘আমি’ সহ) সামগ্রিকতার উন্মোচন হয়ে যায়?